বুধবার, আগস্ট ৬, ২০২৫
No menu items!
Study Center BD
হোমসাধারণ জ্ঞানখেলাব্যাটসম্যানদের দায়িত্বজ্ঞানহীন ব্যাটিং : হোয়াইটওয়াশ বাংলাদেশ

ব্যাটসম্যানদের দায়িত্বজ্ঞানহীন ব্যাটিং : হোয়াইটওয়াশ বাংলাদেশ

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ঢাকা টেস্ট জিততে ২৩১ রানের টার্গেট পায় বাংলাদেশ। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানদের দায়িত্বজ্ঞানহীন ব্যাটিং লজ্জার হারের কারণ হলো স্বাগতিক দলের মাত্র ২১৩ রানে অলআউট হয়ে।

১৭ রানে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট জিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ

ফলে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ ২-০ ব্যবধানে জিতলো ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েটরা।

চট্টগ্রামে প্রথম ৩ উইকেটে জিতেছিলো ক্যারিবীয়রা।

করোনার কারনে দীর্ঘদিন বিরতির পর ক্রিকেটে ফিরে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করলেও, টেস্ট সিরিজে ক্যারিবীয়দের কাছে হোয়াইটওয়াশ হলো বাংলাদেশ।

মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের ম্যাচে তৃতীয় দিন শেষে গতকাল ৩ উইকেটে ৪১ রান করেছিলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এনক্রুমার বোনার ৮ ও জোমেল ওয়ারিকান ২ রানে অপরাজিত ছিলেন।

আজ, দিনের পঞ্চম ওভারের প্রথম বলেই বাংলাদেশকে সাফল্য এনে দেন পেসার আবু জায়েদ। ২ রান করা ওয়ারিকানকে শিকার করেন তিনি। এরপর কাইল মায়ার্সকে ৬ রানে থামান জায়েদ।

এরপর সাত নম্বরে নামা জার্মেই ব্ল্যাকউডকে ৯ রানের বেশি করতে দেননি তাইজুল। ফলে ৭৩ রানে ৬ উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

এরপর সপ্তম উইকেটে বড় জুটির চেষ্টা করেছিলেন বোনার ও উইবেটরক্ষক জসুয়া ডা সিলভা। উইকেটে সেট হতে সর্তকতা অবলম্বন করেন তারা। কিন্তু জুটিতে ৩১ রান আসার পরই তাদের বিচ্ছিন্ন করেন তাইজুল। ২০ রান করা সিলভাকে ফেরান তাইজুল।

দলীয় ১০৪ রানে সিলভার বিদায়ের পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের শেষ ৩ উইকেট তুলে নিতে দেরি করেননি বাংলাদেশের বোলাররা।

১৩ রানে শেষ ৩ উইকেটের বিদায় নিশ্চিত করেন নাইম ও তাইজুল। বোনারকে ৩৮ রানে ও রাকিম কর্নওয়ালকে ১ রানে নাইম এবং আলজারি জোসেফকে ৯ রানে থামান তাইজুল।

ফলে ১১৭ রানে অলআউট হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এতে ম্যাচ জিততে ২৩১ রানের টার্গেট পায় বাংলাদেশ।

দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের সেরা বোলার ছিলেন তাইজুল। ৩৬ রানে ৪ উইকেট নেন তিনি। এছাড়া নাইম ৩টি, জায়েদ ২টি ও মিরাজ ১টি উইকেট নেন।

জয়ের জন্য ২৩১ রানের টার্গেটে শুরুটা দারুন ছিলো বাংলাদেশের। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলারদের চাপে ফেলতে মারুমুখী মেজাজে ব্যাট করেন তামিম ইকবাল।

তাই ১১তম ওভারেই বাংলাদেশের স্কোর ৫০ স্পর্শ করে। এসময় তামিমের রান ছিলো ৩৪ বলে ৪০ রান। তার সঙ্গী সৌম্য উইকেট বাঁচানোতে মনোযোগি ছিলেন। ৩২ বলে ১২ রান ছিলো তার।

চার বোলার ব্যবহার করেও ১২ ওভারে বাংলাদেশের উদ্বোধনী জুটি ভাঙতে পারেননি ওয়েস্ট ইন্ডিজের অধিনায়ক ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট।

তাই বাধ্য হয়ে ১৩তম ওভারে নিজেই আক্রমনে আসেন অধিনায়ক । প্রথম ডেলিভারিতেই সাফল্য পেয়ে যান তিনি। রিভিউ নিয়ে সৌম্যকে ১৩ রানে বিদায় দিতে হয় ব্র্যাথওয়েটকে।

দলীয় ৫৯ রানে সৌম্যকে হারানোর পর ৪৪তম বলে ৬২ ম্যাচের টেস্ট ক্যারিয়ারে ২৮তম হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন তামিম।

অর্ধশতক পাবার আনন্দটা বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি তামিমের। সেই ব্র্যাথওয়েটের স্পিনের সামনে হার মানেন তামিম। ৪৬ বলে ৯টি চারে ৫০ রান করেন তিনি।

৭০ রানে তামিমকে হারানোয় চিন্তায় পড়ে বাংলাদেশ। টাইগারদের সেই চিন্তা আরও বাড়িয়ে দেন কর্নওয়াল। তিন নম্বরে নামা নাজমুল হোসেন শান্তকে ১১ রানে থামান তিনি।

শান্তর আউটের পরই চা-বিরতিতে যায় বাংলাদেশ। তখন রান ছিলো ৭৮। জয়ের জন্য ৭ উইকেট হাতে নিয়ে আরও ১৫৩ রান করতে হতো।

তৃতীয় ও শেষ সেশনে মিডল-অর্ডার ব্যাটসম্যানদের কাছ থেকে বড় জুটি অপেক্ষায় ছিলো বাংলাদেশ। চেষ্টা করেছিলেন অধিনায়ক মোমিনুল হক ও মুশফিকুর রহিম। কিন্তু তাদের সামনে বাঁধা হয়ে দাড়ান ওয়েস্ট ইন্ডিজের আরেক স্পিনার জোমেল ওয়ারিকান। ১৪ রানেই মুশফিকের উইকেট তুলে নেন ওয়ারিকান।

ছক্কা দিয়ে ভালো কিছুর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন প্রথম ইনিংসে ধৈর্য্যর পরীক্ষা দেয়া মোহাম্মদ মিঠুন। এবার ১০ রানে থেমে যান তিনি। তার শিকারী কর্নওয়াল।

দলীয় ১১৫ রানে পঞ্চম উইকেট পতনে লড়াই থেকে ছিটকে পড়ে বাংলাদেশ। এ অবস্থায় বাংলাদেশকে আশার আলো দেখান মোমিনুল ও লিটন। উইকেট ধরে রানের চাকা ঘুরিয়েছেন তারা। এতে লড়াইয়ে ফেরার পথ পায় বাংলাদেশ।

কিন্তু পাঁচ রানের ব্যবধানে মোমিনুল-লিটনের বিদায়ে ব্যাকফুটে চলে যায় বাংলাদেশ। মোমিনুলকে ২৬ রানে ওয়ারিকান ও ২২ রান করা লিটনকে বিদায় করেন কর্নওয়াল। নয় নম্বরে নেমে সুবিধা করতে পারেননি তাইজুল।

তাকে ৮ রানে থামান কর্নওয়াল। এতে ১৬৩ রানে অষ্টম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। তখন জয় থেকে ৬৮ রান দূরে টাইগাররা। আর দিনের ৩৫ বল বাকী ছিলো। বাকী সময় হাতের ২ উইকেট রেখে দিন শেষ করার পথেই হাটচ্ছিলেন মিরাজ ও নাইম।

কিন্তু আচমকাই দিনের শেষ ওভারটি হাতে তুলে নেন ব্র্যাথওয়েট। তার আগে দুই প্রান্ত দিয়ে বল করেছেন ওয়ারিকান ও কর্নওয়াল।

বুদ্ধিদীপ্ত সিদ্ধান্তে ঐ ওভারের চতুর্থ বলে নাইমকে ১৪ রানে ফিরিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে জয়ের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেন ব্র্যাথওয়েট।

নবম ব্যাটসম্যান হিসেবে নাইমের আউটে অতিরিক্ত আরও ৩০ মিনিট খেলার পরিধি বাড়ানো হয়। তখন ১ উইকেট হাতে নিয়ে ৪৩ রান প্রয়োজন ছিলো বাংলাদেশের।

এরপর কর্নওয়ালকে ৩টি চার ও ২টি ছক্কার মারেন মিরাজ। ফলে ১৮ রানের প্রয়োজন ছিলো টাইগারদের। তবে ওয়ারিকানের করা ৬২তম ওভারের তৃতীয় বলে স্লিপে কর্নওয়ালের দুর্দান্ত ক্যাচে ইতি ঘটে মিরাজের ইনিংসের। স্বপ্ন ভঙ্গ হয় বাংলাদেশের।

২১৩ রানে অলআউট হয় টাইগাররা। ৩১ রান করেন মিরাজ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের কর্নওয়াল ৪টি, ব্র্যাথওয়েট-ওয়ারিকান ৩টি করে উইকেট নেন।

ব্যাটসম্যানদের দায়িত্বজ্ঞানহীন ব্যাটিং অবশেষে বাংলাদেশের আরেকটি হারের কারণ হলো। এ যেনো সেই পুরনো বাংলাদেশ!

একটা সময় ছিল যখন ব্যাটম্যানরা অপরিণত ছিল এবং অভিজ্ঞতার অভাবে ব্যাটসম্যানদের দায়িত্বজ্ঞানহীন ব্যাটিং দেখা যেতো।

কিন্তু এই সময়ে এসে এতজন পরিণত ব্যাটসম্যানের অন্তর্ভুক্তির পরও ব্যাটসম্যানদের এমন দায়িত্বজ্ঞানহীন ব্যাটিং হতাশ করেছে সমর্থকদের।

স্কোর কার্ড


ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথম ইনিংস : ৪০৯/১০, ১৪২.২ ওভার (সিলভা ৯২, বোনার ৯০, জায়েদ ৪/৯৮)
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস : ২৯৬/১০, ৯৬.৫ ওভার (লিটন ৭১, মিরাজ ৫৭, কর্নওয়াল ৫/৭৪)

ওয়েস্ট ইন্ডিজ দ্বিতীয় ইনিংস (আগের দিন ৪১/৩, ২১ ওভার, বোনার ৮*, ওয়ারিকান ২*)
ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট ক লিটন ব নাইম ৬
জন ক্যাম্পবেল বোল্ড ব তাইজুল ১৮
শায়নে মোসলে ক মিঠুন ব মিরাজ ৭
এনক্রুমার বোনার বোল্ড ব নাইম ৩৮
জোমেল ওয়ারিকান এলবিডব্লু ব আবু জায়েদ ২
কাইল মায়ার্স এলবিডব্লু ব আবু জায়েদ ৬
জার্মেই ব্ল্যাকউড ক লিটন ব তাইজুল ৯
জসুয়া ডা সিলভা ক সৌম্য ব তাইজুল ২০
আলজারি জোসেফ ক শান্ত ব তাইজুল ৯
রাকিম কর্নওয়াল ক মুশফিক ব নাইম ১
শ্যানন গাব্রিয়েল অপরাজিত ১
মোট (অলআউট, ৫২.৫ ওভার) ১১৭
উইকেট পতন : ১/১১ (ব্র্যাথওয়েট), ২/২০ (ক্যাম্পবেল), ৩/৩৯ (মোসলে), ৪/৫০ (ওয়ারিকান), ৫/৬২ (মায়ার্স), ৬/৭৩ (ব্ল্যাকউড), ৭/১০৪ (সিলভা), ৮/১১৪ (জোসেফ), ৯/১১৬ (বোনার), ১০/১১৭ (কর্নওয়াল)।

বাংলাদেশ বোলিং
তাইজুল : ২১-৪-৩৬-৪,
নাইম : ১৫.৫-৫-৩৪-৩,
মিরাজ : ৬-১-১৫-১,
জায়েদ : ১০-৪-৩২-২।

বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংস
তামিম ইকবাল ক মোসলে ব ব্র্যাথওয়েট ৫০
সৌম্য সরকার ক কর্নওয়াল ব ব্র্যাথওয়েট ১৩
নাজমুল হোসেন শান্ত ক মোসলে ব কর্নওয়াল ১১
মোমিনুল হক ক কর্নওয়াল ব ওয়ারিকান ২৬
মুশফিকুর রহিম ক সিলভা ব ওয়ারিকান ১৪
মোহাম্মদ মিঠুন ক বোনার ব কর্নওয়াল ২২
লিটন দাস ক সিলভা ব কর্নওয়াল ২২
মেহেদি হাসান মিরাজ ক কর্নওয়াল ব ওয়ারিকান ৩১
তাইজুল ইসলাম এলবিডব্লু ব কর্নওয়াল ৮
নাইম হাসান এলবিডব্লু ব ব্র্যাথওয়েট ১৪
আবু জায়েদ অপরাজিত ০
অতিরিক্ত (বা-৮, লে বা -৪, নো-২) ১৪
মোট (অলআউট, ৬১.৩ ওভার) ২১৩
উইকেট পতন : ১/৫৯ (সৌম্য), ২/৭০ (তামিম), ৩/৭৮ (শান্ত), ৪/১০১ (মুশফিক), ৫/১১৫ (মিঠুন), ৬/১৪৭ (মোমিনুল), ৭/১৫৩ (লিটন), ৮/১৬৩ (তাইজুল), ৯/১৮৮ (নাইম), ১০/২১৩ (মিরাজ)।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ বোলিং
রাকিম কর্নওয়াল : ৩০-৫-১০৫-৪,
আলজারি জোসেফ : ২-০-১৬-০,
শ্যানন গাব্রিয়েল : ২-০-৮-০ (নো-৭),
জোমেল ওয়ারিকান : ১৬.৩-৪৭-৩ (নো-২),
ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট : ১১-১-২৫-৩।

ফল : ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১৭ রানে জয়ী।

সিরিজ : দুই ম্যাচের সিরিজ ২-০ ব্যবধানে জিতলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

Author

  • Study Center BD

    Study Center BD is a educational resource and educational research related knowledge base website. We provide easily understandable study resources with easy approaches. So that the students do not desperate and get bored.

    Study Center BD www.studycenterbd.online https://studycenterbd.online Mobile: +880 1877748005 E-Mail: info@studycenterbd.online

    Mastodon Profile: Mastodon

স্টাডি সেন্টার বিডি
স্টাডি সেন্টার বিডিhttps://studycenterbd.online

Study Center BD is a educational resource and educational research related knowledge base website. We provide easily understandable study resources with easy approaches. So that the students do not desperate and get bored.

Study Center BD www.studycenterbd.online https://studycenterbd.online Mobile: +880 1877748005 E-Mail: info@studycenterbd.online

Mastodon Profile: Mastodon
RELATED ARTICLES

একটি জবাব দিন

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments