শুক্রবার, নভেম্বর ১৪, ২০২৫
- Advertisement -
ঘটমান সংবাদ
আরও

    যথাযোগ্য মর্যাদায় অমর একুশে ফেব্রুয়ারি ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত

    হোমজাতীয়যথাযোগ্য মর্যাদায় অমর একুশে ফেব্রুয়ারি ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত

    যথাযোগ্য মর্যাদায় অমর একুশে ফেব্রুয়ারি ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত

    সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে প্রতিহত করার অঙ্গীকারের মধ্যদিয়ে আজ রোববার রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে অমর একুশে ফেব্রুয়ারি ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়েছে।

    কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে আসা মানুষ বাংলাকে জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষার মর্যাদা দেয়ার পাশাপাশি সর্বস্তরে বাংলা ভাষা প্রচলনের দাবী জানায়। মহান একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন উপলক্ষে ভাষা শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে একুশের প্রথম প্রহরেই হাজার হাজার মানুষ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আসেন। ফুলে ফুলে ভরে উঠে বাঙালির শোক আর অহংকারের এই মিনার। তবে করোনা ভাইরাসের কারনে এই বছর আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কিছু বিধি নিষেধ থাকায় কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে মানুষের উপস্থিত কিছুটা কম ছিল।

    রাত ১২টা ১টি মিনিটে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে তাদের সামরিক সচিবরা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

    প্রথমে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের পক্ষে তাঁর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এসএম সালাহউদ্দিন ইসলাম এবং এর পরপরই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে তাঁর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল নকীব আহমেদ চৌধুরী কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এ সময় অমর একুশের কালজয়ী গান ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’ বাজানো হয়। তারা কিছুক্ষণ নিরবে দাঁড়িয়ে থেকে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

    এরপর আওয়ামী লীগ সভাপতির পক্ষে দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের শহীদ মিনারের বেদীতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। এসময় আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলির সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী ও কর্নেল (অব.) ফারুক খান এবং তথ্যমন্ত্রী ও দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়–য়া, উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খান উপস্থিত ছিলেন।

    এছাড়া জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

    এছাড়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, পরাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, সংসদে বিরোধীদলীয় উপনেতা জি এম কাদের, তিন বাহিনীর প্রধান, পুলিশের মহাপরিদর্শক, র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ানের (র‌্যাব) প্রধান এবং আনসার বাহিনী প্রধান পুষ্পস্তবক অর্পণ করে ভাষা আন্দোলনের বীর শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

    ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস ভাষা শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এছাড়া জাসদ, ন্যাপ, ওয়ার্কার্স পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দও শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

    পরে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনারবৃন্দ, বিদেশী সংস্থার প্রধানগণ শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

    বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দও একুশের প্রথম প্রহরে শহীদ বেদীতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

    এর আগে মধ্য রাতে ঘড়ির কাঁটা ১২টা ছোঁয়ার আগেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতাকর্মীসহ সর্বস্তরের মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মেনে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় উপস্থিত হন।

    এসময় হাজার হাজার মানুষ খালি পায়ে বুকে শোকের প্রতীক কালো ব্যাজ ধারণ করে হাতে ফুলের তোড়া নিয়ে ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারিÑআমি কি ভুলিতে পারি’- গানে কণ্ঠ মিলিয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের দিকে এগিয়ে যান। একই সাথে তারা সর্বস্তরে বাংলা প্রচলনের এবং অন্যান্য জাতিসত্তার ভাষা ও বর্ণমালা সংরক্ষণের দাবি জানান।

    অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জমানের নেতৃত্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, বাসদ, সাম্যবাদী দল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রথম প্রহরে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানায়।

    এছাড়াও বিএনপি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ও সিনেট সদস্যবৃন্দ, সেক্টরস কমান্ডার্স ফোরাম, গণফোরাম, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তর ও দক্ষিণ, ছাত্রলীগ, আওয়ামী যুব লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগ, বাংলা একাডেমি, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি, শিল্পকলা একাডেমি, উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী, কেন্দ্রীয় খেলাঘর আসর, ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্র ফ্রন্ট, ছাত্র ফেডারেশন, বঙ্গবন্ধু পরিষদ, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট, বঙ্গবন্ধু গবেষণা পরিষদ, গণতন্ত্রী পার্টি, আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন ভাষা শহীদদের ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায়।

    এদিকে সকালে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে প্রভাতফেরী সহকারে আজিমপুর কবরস্থানে শহীদদের কবরে ও কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করা হয়।

    প্রভাতফেরি সহকারে শহীদ মিনারে পৌঁছুনোর আগে ড. হাছান মাহমুদ আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দকে নিয়ে ভাষা শহিদ আবুল বরকত, আব্দুল জব্বার ও শফিউরের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য আজিমপুর কবরস্থানে যান। সেখানে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে নিরবে প্রার্থনা শেষে শহিদ মিনার অভিমুখে পদযাত্রা করেন তারা।

    আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য আব্দুল মতিন খসরু, লে: কর্নেল (অব:) মুহাম্মদ ফারুক খান ও আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আবদুস সবুর, সংস্কৃতি সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, দপ্তর সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ এসময় উপস্থিত ছিলেন।

    দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। আজ ছিল সরকারি ছুটির দিন।

    ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারিতে বাংলা ভাষার দাবীতে রাস্তায় নেমে আসে মানুষ। জারি করা হয় ১৪৪ ধারা, ভেঙে ফেলা হয় শোষকের শৃঙ্খল। রক্তে ভেসে যায় রাজপথ। গুলিতে বিদীর্ণ হয় বুক। শহীদ হন রফিক, শফিক, সালাম, বরকত, জব্বারসহ নাম না জানা আরো অনেকে। ভাষার জন্য প্রাণ দিয়ে ইতিহাস গড়েন তারা। বাংলা পায় রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে একাত্তরে জন্ম নেয় স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ।

    মাতৃভাষার জন্য প্রাণ উৎসর্গের এই দিনটিকে জাতিসংঘ স্বীকৃতি দেয় ১৯৯৯ সালে। অমর একুশে এখন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। একুশের চেতনার প্রতীক ‘শহীদ মিনার’ এখন এশিয়া, ইউরোপ, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়াসহ সব কটি মহাদেশের বহুভাষিক চেতনার স্মারক। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি পালন করা হয়।

    এদিকে বেলা ১১ টায় ভাষা শহীদদের রূহের মাগফিরাত এবং দেশের শান্তি, সমৃদ্ধি ও উন্নতি কামনা করে বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদে কুরআনখানি, দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।

    অমর একুশে ফেব্রুয়ারি মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন উপলক্ষে বাংলাদেশ শিশু একাডেমি এক আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। বাংলাদেশ শিশু একাডেমির চেয়ারম্যান লাকী ইনামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা।

    এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কাজী রওশন আক্তার। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন শিশু একাডেমির মহাপরিচালক জ্যোতি লাল কুরী।

    Author

    • Study Center BD

      Study Center BD is a educational resource and educational research related knowledge base website. We provide easily understandable study resources with easy approaches. So that the students do not desperate and get bored.

      Study Center BD
      www.studycenterbd.online
      https://studycenterbd.online
      Mobile: +880 1877748005
      E-Mail: info@studycenterbd.online

      Mastodon Profile: Mastodon

    স্টাডি সেন্টার বিডি
    স্টাডি সেন্টার বিডিhttps://studycenterbd.online

    Study Center BD is a educational resource and educational research related knowledge base website. We provide easily understandable study resources with easy approaches. So that the students do not desperate and get bored.

    Study Center BD www.studycenterbd.online https://studycenterbd.online Mobile: +880 1877748005 E-Mail: info@studycenterbd.online

    Mastodon Profile: Mastodon
    RELATED ARTICLES

    একটি জবাব দিন

    আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
    এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

    Most Popular

    Recent Comments