শনিবার, এপ্রিল ১৯, ২০২৫
Study Center BD
হোমলাইফহার্ট নিয়ে চিন্তিত? জেনে নিন সুস্থ রাখার উপায়

হার্ট নিয়ে চিন্তিত? জেনে নিন সুস্থ রাখার উপায়

শরীরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হৃৎপিণ্ড; যা মানুষের সমস্ত শরীরে রক্ত সঞ্চালন করে চলে সবসময়। এর যত্ন না নিলে ঘটে যেতে পারে ভয়াবহ হার্ট বিপর্যয়। আমরা যদি একটু সচেতন থাকি তাহলেই এই হার্ট সুস্থ-সবল রাখতে পারি খুব সহজেই। আপনি কি হার্ট নিয়ে চিন্তিত? তবে আসুন জেনে নিই এই হার্টকে সুস্থ রাখার নানাবিধ উপায়।

হার্ট সুস্থ রাখার উপায়

প্রাত্যহিক জীবনে হৃৎপিণ্ডকে সুস্থ সবল রাখতে পাব়ে যে অভ্যাসগুলো, সেগুলো হলো- স্বাস্থ্যসম্মত ও পরিমিত খাবার, নিয়মিত ব্যায়াম, মানসিক চাপ না নেওয়া, ওজন নিয়ন্ত্রণ আর ধূমপান না করা।

এই কাজগুলো করা খুব সহজ মনে হলেও বাস্তবে ততটা সহজ নয়। কারণ একটি নতুন অভ্যাস বিশেষ করে ভালো অভ্যাস গড়ে তোলা এত সহজ নয়। বরং দীর্ঘদিন চেষ্টার পরই এমন অভ্যাস গড়ে তোলা সম্ভব। তবে চেষ্টা করলে আপনার পক্ষেও এই অভ্যাসগুলো গড়ে তোলা সম্ভব। তাহলে জেনে নেয়া যাক হার্ট ভালো রাখার উপায়সমূহ:

১. নিয়মিত ব্যায়ামের অভ্যাস গড়ে তুলুন: শারীরিক ব্যায়ামের মাধ্যমে ঘাম ঝরানো ভীষণ ক্লান্তিকর ব্যাপার। অথচ হৃৎপিণ্ড ভালো রাখতে সপ্তাহে ন্যূনতম পাঁচ দিন করে রোজ ৩০ মিনিট ব্যায়ামের প্রয়োজন বড়দের। কিন্তু ব্যায়ামের অভ্যাস না থাকলে হুট করে ব্যায়াম করা যায় না । এ কারণে বাসায় বাচ্চাকাচ্চা থাকলে তাদের সঙ্গে খেলার মধ্য দিয়ে ব্যায়ামের কাজটা সেরে নিতে পারেন। সেটা হতে পারে কায়িক পরিশ্রমের যেকোনো খেলা। বাচ্চা না থাকলে ২০মিনিট হাঁটা কিংবা সাংসারিক কাজের মধ্য দিয়ে ব্যায়ামের রুটিন সেরে নিতে পারেন। অথবা অফিস থেকে ফেরার পর বিকেলে কিংবা রাতে এ রকম আরও কিছু কাজ দিয়ে ব্যায়াম সেরে নিতে পারেন।

২. সঠিক খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলুন: হয়তো আপনি ‘স্যাচুরেটেড ফ্যাট’ (ক্ষতিসাধক স্নেহ পদার্থ) খেতে ভালোবাসেন। যেমন ধরুন, ‘রেড মিট’ কিংবা পূর্ণমাত্রায় ফ্যাটযুক্ত দুগ্ধজাত দ্রব্যাদি। হৃৎপিণ্ড ভালো রাখতে এসব খাবার ছাড়তে হবে। অভ্যাসটা ধীরে ধীরে পাল্টাতে আপনি ‘রেড মিট’-এর মেন্যুতে ধীরে ধীরে ‘লো-ফ্যাট মিট’ যোগ করুন। দুগ্ধজাত খাবারের পরিবর্তে জলপাই কিংবা ‘ক্যানোলা অয়েল’ খেতে পারেন। খাবারে লবণের পরিমাণ কমান। প্রক্রিয়াজাত কিংবা প্যাকেটজাত খাবার কম খান। প্রতিদিনের খাবারে ১ হাজার ৫০০ মিলিগ্রামের বেশি লবণ খাবেন না। ভালো করে রান্না করলে শাকসবজি খেতে কিন্তু দারুণ লাগে। শাকসবজি খান প্রতিদিন দুই থেকে আড়াই কাপ, সঙ্গে থাকুক ফলমূল। শস্যদানা বা ‘গ্রেইন’যুক্ত খাবার খেতে পারেন, যেমন বাদামি চাল, বার্লি, পপকর্ন, ওটমিল, গমের রুটি, গমের প্যানকেক ইত্যাদি। ফাস্ট ফুডের নেশা থেকে অবশ্যই বেরিয়ে আসুন। খেলেও বেছে বেছে খান।

৩. পরিমিত বিশ্রাম নিন: দৈনন্দিন কাজের ফাঁকে পরিমিত বিশ্রাম নিন। মানে, স্রেফ কিছুই করবেন না, কোনো চাপ নেওয়ার দরকার নেই। পূর্ণমাত্রায় বিশ্রাম হৃৎপিণ্ডের জন্য উপকারী। যুক্তরাষ্ট্রের ‘একাডেমি অব নিউট্রিশন অ্যান্ড ডায়াটেটিকস’-এর চিকিৎসক সুসান মুরের ভাষ্য, হৃৎপিণ্ডের সুস্বাস্থ্য রক্ষায় মানসিক চাপ ‘খলনায়ক’-এর ভূমিকা পালন করে। গোটা স্বাস্থ্যের ওপরই এটা মারাত্মক প্রভাব ফেলে। আর তাই মাঝেমধ্যে কাজ ফেলে উঠে দাঁড়ান। বড় করে একটা শ্বাস নিয়ে মোবাইল ফোন বন্ধ করুন। সাংসারিক কিংবা অফিসের কাজ ভুলে যান। স্রেফ নিজের জন্য বিশ্রাম নিন। সেটা শুয়ে-বসে যেকোনোভাবে। বিশ্রাম নেওয়ার পর দেখবেন ভীষণ ফুরফুরে লাগছে। মানে, ওই বিশ্রামের সময়টুকু আপনাকে কাজের জন্য উজ্জীবিত করে তুলবে।

৪. বাড়তি ওজন কমিয়ে ফেলুন: স্থূলকায় মানুষের ওজন নিয়ে দুর্ভাবনার শেষ নেই। ওজন কমাতে ক্যালরির হিসাব করছেন, ব্যায়াম করছেন কিন্তু তারপরও কমছে না কিছুতেই। একটু মাথা খাটান। আপনি কি স্বাস্থ্যকর খাবার খাচ্ছেন? স্বাস্থ্যকর খাবার আর ক্যালরিযুক্ত খাবার কিন্তু এক নয়। পুষ্টিকর খাবার খান এবং ক্যালরি খরচ ও গ্রহণে ভারসাম্য আনুন। তরল খাবার খেতে পারেন। শাকসবজি থাকুক প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায়। এ ছাড়া শারীরিক পরিশ্রম করুন। প্রতিদিন ৩০ মিনিট হাঁটা বাধ্যতামূলক করুন। লিফটের বদলে সিঁড়ি ব্যবহার করুন। বাসা থেকে বের হয়েই রিকশা না নিয়ে হেঁটে কিছুটা পথ এগোন। বাসায় ফেরার পথেও একই কৌশল অনুসরণ করুন।

৫. ধূমপান থেকে বিরত থাকুন: ধূমপানের অপকারিতা সমন্ধে আমরা সবাই জানি। এ বদভ্যাসটি ছাড়ার নির্দিষ্ট কোনো পথ নেই। যে যার মতো করে চেষ্টা করে থাকে। চিকিৎসকের পরামর্শ, পরিবারের সাহায্য কিংবা এ দুটি ব্যাপার মিলিয়ে চেষ্টা করলে সুফল পেতে পারেন। ধূমপানের অপকারী দিকগুলো নিয়ে ভাবুন। এটা ছাড়ার উপকারী দিকগুলোতে মনোযোগী হতে পারেন। ধূমপায়ী বন্ধুদের সঙ্গ ত্যাগ করাই শ্রেয়। মদ্যপান এড়িয়ে চলুন। এটা ধূমপানে আপনাকে আরও আকৃষ্ট করবে। শরীরচর্চার মধ্যে থাকলে ধূমপানের ইচ্ছা কমে যেতে পারে। কর্মচাঞ্চল্যের মধ্যে থাকলেও সুফল পেতে পারেন।

৬. মানসিক প্রশান্তি বজায় রাখুন: হৃৎপিণ্ড ভালো রাখতে মানসিক প্রশান্তির বিকল্প নেই। কিন্তু কর্মক্ষেত্র, সমাজ কিংবা পরিবার থেকে মানুষ নানাভাবে চাপে থাকে। এসব চাপ যেমন মোকাবিলা করতে হবে, তেমনি বুদ্ধি করে কমাতেও হবে। প্রতিদিনের কাজের চাপ শেষে নিজের জন্য আলাদা করে একটু সময় বের করুন। পছন্দের গান শুনতে পারেন কিংবা বই পড়তে পারেন। কোনো কারণে মনে কষ্ট পেলে তা বন্ধু কিংবা প্রিয়জনের সঙ্গে ভাগ করে নিন। মনে কষ্ট পুষে রাখবেন না। এ ধরনের অভ্যাস হৃদ্‌রোগ ডেকে আনে। সবচেয়ে ভালো হয় পরিবার কিংবা কর্মক্ষেত্রে চমৎকার সামাজিক বন্ধন গড়ে তোলা। ধীরে ধীরে উপরে বর্ণিত অভ্যাসগুলো গড়ে তুলুন এবং বদঅভ্যাসগুলো ত্যাগ করুন, দেখবেন আপনার হার্ট দিব্যি সুস্থ আছে।


আরও পড়ুনটি২০ বিশ্বকাপ ২০২১ এর ফিক্সচার

Author

  • Study Center BD

    Study Center BD is a educational resource and educational research related knowledge base website. We provide easily understandable study resources with easy approaches. So that the students do not desperate and get bored.

    Study Center BD www.studycenterbd.online https://studycenterbd.online Mobile: +880 1877748005 E-Mail: info@studycenterbd.online

    Mastodon Profile: Mastodon

স্টাডি সেন্টার বিডি
স্টাডি সেন্টার বিডিhttps://studycenterbd.online

Study Center BD is a educational resource and educational research related knowledge base website. We provide easily understandable study resources with easy approaches. So that the students do not desperate and get bored.

Study Center BD www.studycenterbd.online https://studycenterbd.online Mobile: +880 1877748005 E-Mail: info@studycenterbd.online

Mastodon Profile: Mastodon
RELATED ARTICLES

একটি জবাব দিন

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments